গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা-৫টি ফল খাবেন না
কাঁচা আম খাওয়ার উপকারিতা- গর্ভাবস্থায় আম খাওয়া যাবি কি?
গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারন একটি গর্ভবতী সুস্থ মা,ই পারবে একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে। আর এই সময় যে ভুলগুলো সাধারনত পুষ্টির হয়ে থাকে তার মধ্য সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে খাবার-দাবার এর অনিয়ম বা না বুঝে পুষ্টি ইনটেক করা। অনেকে আছেন যে বুঝতে পারেন না আসলে কোন খাবার গুলো গর্ভবতী মায়ের জন্য খুব জরুরি আর কোন খাবার গুলো না খেলেও চলবে। আপনার ঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া যেমন শিশুর জন্য সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে, তেমনি কিছু নির্দিষ্ট খাবার এরিয়ে চলা জরুরি- যা গর্ভবতী মায়ের ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অনেকে ভাবেন, গর্ভবতী মানেই দুজনের জন্য খাওয়া, কিন্ত সব খাবারি কি উপকারি? আসলে না। কিছু খাবার আছে যা গর্ভবস্থায় খেলে হতে পারে বিপদজনক; যেমন- গর্ভপাত, অকাল প্রসব, সংক্রমণ বা শিশুর বিকাশে বাঁধা। তাই আপনি একজন সচতন মা হিসাবে কি খাবেন কি খাবেন না - সেটা জানা অত্যন্ত জরুরি। আপনার ও আপনার বাচ্চার সুসাস্থর জন্য আজকে আমার এই ব্লগ, সঠিক তথ্য আপনাদের কাছে পৈাছে দেওয়াই Sagormax এর মূল লক্ষ।
পেস্টসূচিপত্রঃ গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা-৫টি ফল খাবেন না
গর্ভবতী মায়ের যে সকল খাবার একদমই পরিহার করা উচিত
গর্ভাবস্থা যে কোনো নারীর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। গর্ভকালিন সময়ে
সঠিক পরিমান সুষম খাদ্য নিশ্চিত করা না হলে গর্ভশয়ে
শিশুর বিকাশ মারাত্মকভাবে প্রতিহত হতে পারে। আর তাই গর্ভবতী মায়ের
খাবার তালিকা সম্পর্কে জানা অন্যন্ত জরুরি। গর্ভকালিন সময়ে কি কি খাবার
গ্রহন করা প্রয়োজন? এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে কিছু কিছু খাবার গর্ভবতী মা ও শিশুর
জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে যা পরিহার করা উচিত। জানব এই ধরনে
খাবার গুলোর তালিকা ও পুষ্টিকর খাবার কোনগুলোঃ-
শর্করা পুষ্টি উপাদানঃ
একজন মা ও অনাগত শিশুর বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় শর্করা
অন্তভূক্ত করা উচিত। স্বাস্থ্যসম্মত শর্করার উল্লেখযোগ্য উৎস হলো গোটা দানা
যুক্ত রুটি, শাকসবজি, মটর শুটি শিম, ইত্যাদি।
আমিষ ঃ
গর্ভকালিন সময়ে আমিষের প্রয়োজন প্রতি মাসে বাড়তে থাকে, বিষেশ করে নবজাতকের কোষের
সুনির্দিষ্ট বিকাশের জন্য আমিষের প্রয়োজনিয়তা অপরিহার্য। গর্ভবতী মায়ের খাদ্য
তালিকাতে আমিষের উৎস হিসেবে ডিম, বাদাম, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, মটরশুটি,
দই, ও পানির, স্বাস্থ্যকর চর্বি ইত্যাদি থাকা উচিত।
কোলিনঃ
একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকাতে কোলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে শিশুর
সুষুম্নাকান্ড বিকলাংগতার ঝুকি হ্রাস পায়। কিছু ভালো কোলিনের উৎস হলো গরুর
কলিজা, ডিম, মাশরুম, সরিষা বীজ ইত্যাদি।
ফলিক এসিডঃ
ফলিক এসিড শিশুর ডিএনএ বিকাশের শেষ ধাপের অংশ। রান্নাকৃত সবুজ শাকসবজি, গরুর
লিভার ও কমালেবু জাতীয় ফল ফলিক এসিডের ভালো উৎস। আমাদের দেহে ফলিক এসিড সঞ্চয়
করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ হওয়াতে খুব দ্রুত এর শূন্যতা তৈরি হওয়ার ঝূকি থাকে।
তাৈই ডাক্তাররা সাধারনত গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড সাপ্লিমেন্টারি বা সম্পূরক
ঔষধ দিয়ে থাকেন।
ভিটামিন- এ
কোষের সংখ্যাবৃদ্ধি ও বিভিন্ন অঙ্গের বিকাশে গু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একই সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন এ অপরিহার্য। দুধ ও দুগ্ধ
জাতীয় খাবার, মুরগি, গরুর লিভার ও মাছের তেল থেকে একজন গর্ভবতী মা তার দৈনন্দিন
ভিটামিন- এ এর চাহিদা পূরণ করতে পারেন।
ভিটামিন বি-১
ভিটামিন বি-১ শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর সুষ্ঠ বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
আটার রুটি, ওটস, মাছ ও মাংস ভিটামিন বি-১ এর ভালো উৎস।
ভিটামিন বি-২
ভিটামিন বি-২ গর্ভাবস্থায় কোষের শক্তি উৎপাদন ও সুস্থতা নিশ্চিত
করার জন্য অপরিহার্য। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার হতে পারে
ভিটামিন বি-২ এর প্রধান উৎস।
ভিটামিন বি-৫
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন বি-৫ দেহে
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা ও বিপাকীয় কাজে সাহায্য করে। মাংস, ডিমের কুসুম,
আলু ও শস্যজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি-৫ পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি -৬
পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন বি- ৬ নবজাতকের মস্তিস্ক ও স্নায়ুর বিকাশে ভূমিকা
রাখে। গরুর লিভার, মুরগির মাংস, আলু, সবুজ শাকসবজি এবং কমলালেবু ব্যতিত অনান্য
ফলে পচুর পাইরিডক্সিন পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি-১২
এর প্রধান উৎস হলো মাংস এবং দুগ্ধজাতীয় খাবার। তাই কেউ সম্পূর্ণ শাকাহারী
হলে ডাক্তার সেই অভাব পূরণের জন্য ভিটামিন বি-১২ সাপ্লিমেন্টবি বা সম্পূরক ঔষধ
সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ভিটামিন-সি
একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় সর্বদা ভিটামিন সি জাতীয় খাবার সংযুক্ত করা
অপরিহার্য। কমলালেবু জাতীয় ফল, আমলকি, কামরাংঙ্গা, পেয়ারা ইত্যাদিতে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আমাদের ত্বকে ভিটামিন ডি এর
নিষ্ক্রিয় রুপ সঞ্চিত থাকে যা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে লিভার ও কিডনির
মাধ্যমে সক্রিয় উপাদানে পরিণত হয়। তাই গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত সূর্যালোক নিশ্চিত
করতে হবে। সূর্যালোক ব্যতীত চর্বি জাতীয় মাছ যেমন স্যালমন, টুনা এবং কড মাছের
লিভারে ভিটামিন ডি সরাসরি পাওয়া যায়।
পানি
গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পানির প্রয়োজন পড়ে, কারন একজন হবু মা কে
নিজের পানির চাহিদার সাথে সাথে শিশুর পানির চাহিদাও পূরন করতে হয়। সাধারনত
একজন মায়ের প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়া উচিত। একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য
তালিকায় পর্যাপ্ত পানির চাহিদা পূরণ না হলে
পানিশূণ্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি হতে পারে।
গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
- ভালোভাবে রান্না না করা মাছ ও মাংস
- কাঁচা ডিম
- ফলমূল ও শাকসবজি না ধুয়ে খাওয়া
- দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের অতিরিক্ত কফি
- অপাস্তরিত দুধ, পনির ও জুস
- চিপস, অতিরিক্ত চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার ইত্যাদি
গর্ভাবস্থায় যেসব ফল ভুলেও খাবেন না
প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে আমরা বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও খাবার খেয়ে থাকি, এর
মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার যেটি ভিটামিন এবং মিনারেলসি সোর্স আর তা হলো
বিভিন্ন ধরনের ফল। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে কোন খাবার গুলো খেলে
গর্ভবতী মা ও সন্তান সুস্থ থাকবে বা কোনটি প্রেগনেন্সিতে খাবেন না। এসব
খাওয়া-দাওয়া বিষয়ে মায়েরি কিন্ত ভীতী থাকে তাই মায়ের ভীতির জন্য বলছি যে
গর্ভাবস্থায় কিছু কিছূ ফল আছে যেগুলো আমরা অ্যাভোয়েট করতে বলি।
গর্ভধারনের পর প্রতিটি নারীকে সন্তানের কথা ভেবে খাবারের বিষয়ে সচেতন থাকতে
হয়। অনেক খাবার আছে যেগুলো গর্ভবস্থায় খাওয়া উচিৎ নয়। বিষেশ করে কিছু কিছু
ফল গর্ভাবস্থায় খাওয়া উচিৎ নয়, কারন কিছু ফল গর্ভপাতের কারন হতে পারে। চলুন তাহলে
জেনে নেওয়া যাগ গর্ভাবস্থায় কোন কোন ফল খাবেন না বা সাবধান হবেন ।
প্রথম তিন মাসে গর্ভাবস্থাকালে আনারোস এরিয়ে চলুন। কারন আনারস খাওয়ার ফলে
জ্বরয়ায়ুতে তৃব্র সংকচন হতে পারে। এর ফল স্বরূপ গর্ভপাত ও ঘটতে পারে। আনারসে
ব্রমেলিইন থাকে এটি একটি এ্যানজাইম যা প্রটিন কে ভেঙ্গে দেয় ফলে জরয়ায়ু নরম হয়ে
অকাল প্রসব ঘটতে পারে। এজন্য গর্ভবস্থায় আনারস খাবেন না । যারা নরমালি
কনসেফ করতে পারেন তাদের কে বলবো যে তিন মাস প্রযন্ত আপনি কাঁচা আনারস বা পাকা
আনারস অনেকটা পরিমানে না, কাঁচা পেপে বা পাকা পেপে একেবারে অ্যাভোয়েট
করবেন।
পেপে তে পচুর পরিমানে পুষ্টি ও ভিটামিন থাকলেও গর্ভবতীদের জন্য এ ফল ততটা উপযুক্ত
নয়। কারন পেপে শরিরের তাপমাত্রা বারিয়ে তোলে। এ ফল ল্যাটেট সমৃদ্ধ যা
জরয়ায়ুর সংকচন রক্তপাত ও গর্ভপাত ঘটার কারন হতে পারে। এটি ভ্রুনের বিকাশ কেও
বাঁধাগ্রস্থ করতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা পাকা পেপে এরানোয় ভালো।
গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর খাওয়া এরানো উচিৎ, সবুজ বা কালো অভয় ধরনের আঙ্গুর ক্ষতিকর হতে
পারে। যদিও এ বিষয়ে মিশ্র মতামত আছে। কারন আঙ্গুরে থাকে যৈবিক ম্রেকটল
গর্ভবতী নারীর জন্য বিষাক্ত হতে পারে। গর্ভবস্থায় কালো আঙ্গুরের চামরা হজম
করা কষ্টকর হতে পারে, কারন এসময় হজম ব্যবস্থা দূরবল থাকে ।
গর্ভাবস্থায় টক জাতীয় কিছু ক্ষেতে ইচ্ছে করলেই তেঁতুলের কথা ভাবতে পারেন বা মনে
আসে । তবে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। তেঁতুলে পচুর পরিমানে
ভিটামিন সি থাকে , যা গর্ভবতী নারীদের এরানো উচিৎ। তারপরেও গর্ভাবস্থায় মায়েদের
টক জাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে করে ও অনেকে খেয়ে থাকেন। তবে এটি অতিরিক্ত পরিমানে
খেলে শরীরে প্রটেসট্রোনের উৎপাদন কমে যায় ফলে গর্ভপাত ও ঘটতে পারে এমন কি ভ্রুনের
কষেরও ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মানে খুব বেশি তেঁতুল খাবেন না
এরিয়ে যেতে পারলে আরো ভালো।
গর্ভাবস্থায় এরানো উচিৎ এমন ফলের তালিকায় আছে কলার নামটিও।
বিষেশ করে যেসব নারীরা গর্ভাবস্থায় অ্যালার্জি বা ডায়বেটিস এ ভোগেন তাদের
কে কলা খেতে নিষেধ করেন বিষেশঙ্গরা। কলাতে চিটিনেক্স থাকে এটি একটি ল্যাট্রেক্স
জাতীয় উপাদান যা একটি পরিচিত এলার্জি। এটি শরীরের উত্তাপ বারায় তাই চিটিনেস কলা
থেকে গর্ভবতী নারীদের দূরে থাকা উচিৎ। এছাড়া কলায় থাকে প্রচুর পরিমানে চিনি তাই
ডায়াবেটিস রোগিদের কলা খাওয়া এরানো উচিৎ।
গরমে তরমুজ খাওয়ার ধুম পরে যায় শরীরে আদর্যতা ধরে রাখার পাশাপাশি দেহ থেকে সব
ধরনের বিশাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সক্ষম তরমুজ। তবে এর খারাপ দিকও আছে বিশেষ করে
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেরে শরীরের সব ধরনের টকসিন ধংশের পাশাপাশি ভ্রুনেরও ক্ষতি হতে
পারে। যদিও আপনার জন্য এই ফল ততটা খারাপ নয় তবে এর খারাপ প্রভাব শরীরে পরতে পারে।
আবার তরমুজ অতিরিক্ত সেবনে শরীরের রক্তে গ্লোকজের মাত্রা বারিয়ে তুলতে পারে আবার
শরীর থেকে টকসিনের সাথে সাথে পুষ্টিগুন ও বের করে নিতে পারে। তরমুজ খেলে শরীর
ঠান্ডা হয় ফলে গর্ভবতী নারী স্থবি হতে পারে তাই গর্ভবস্থায় তরমুজ খাওয়াতে বিশেষ
শতর্ক থাকা উচিৎ খেলেও খুব বেশি নয়।
গর্ভবতী মায়ের ফল খাবারের তালিকা
১. প্রতিদিন একটি আপেল খেলে মায়ের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
২. কলা খেলে শক্তি বাড়ে এবং বমি বমি ভাব কমায়।
৩. কমলালেবু ভিটামিন সি সরবরাহ করে এবং হজমে সহায়ক।
৪. পেয়ারায় ভিটামিন ‘ সি ” ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
৫. ডালিম রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়ক ও আয়রন সমৃদ্ধ।
৬. আম ভিটামিন এ সরবরাহ করে যা ভ্রণের বৃদ্ধি উন্নত করে।
৭. আভোকাডোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফোলেট ও ভিটামিন “ কে” মায়ের জন্য উপকারি।
৮. তরমুজ মায়ের শরীর হাইড্রেটেড রাখে এবং ফোলাভাব কমায়।
৯. স্ট্রবেরি ভিটামিন সি ও ফোলেট সরবরাহ করে ভ্রণের বৃদ্ধিতে সহায়ক।
১০. নাশপাতি আঁশ সমৃদ্ধ, যা গর্ভাবস্থায় হজম শক্তি বাড়ায়।
গর্ভাবস্তায় যে পাঁচটি ফল বেশি খাবেন
১. কমলা- ফাইবার আর ফলিক এসিডের ভালো উৎস কমলা।
২. পেয়েরা - এতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি। বলা হয়, চারটি আপেল বা
চারটি কমলাল সমান ভিটামিন আছে মাত্র একটি পেয়ারাতে।
৩. কলা- পুষ্টিগুনে ভরপুর কলা। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন অন্তত একটি কলা খাওয়
উচিত।
৪. আপেল- আপেল প্রচুর আয়রন থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন একটি করে কমলা খেলে
বাচ্চার এলার্জি ও অ্যাজমা হওয়ার শঙ্কা কমে।
৫. কুউই- এতে রয়েছে ফাইবার, ফলিক এসিড, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই। এছাড়াও
রয়েছে প্রচুর পরিমান এন্টিঅক্সিডেন্ট। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করে
এই কিউই।
Pregnant মহিলাদের আবশ্যিক ১০ টি খাবার
প্রেগনেন্সি ইজ এ বিউটিফুল জার্নি ইস এ এভরিথিং কাপল। এই ৮ থেকে ৯ মাস
একটি মানব শিশু তার মায়ের গর্ভে মায়ের কুষ্ঠির উপর নির্ভর করে নিজের আকার ধারন
করে। শুধুমাত্র আকার নয় ব্রেনের ডেভালাপম্টে, হারের গঠন, সবকিছু কিন্তু মায়ের
পুষ্টির উপর নির্ভর করে। সে জন্য একজন মহিলা যখন গর্ভধারন করতে চাইছেন তার
শরীরে যেরকম পুষ্টির চাহিদা থাকে বা প্রয়োজনিয়তা থাকে সেরকমি গরভধারন করার পর
প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে অনবরত পুষ্টি সরবরাহ কিন্ত একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে বিভিন্ন ট্রাইমেস্টার অনুযায়ী খাবারের চাহিদা কিন্ত
পরিবর্তন হয়। কিন্ত কিছু খাবার থাকে যেগুলো ৮ থেকে ৯ মাস প্রতেকদিন আপনি
যে খাবারগুলো খান এই খাবার গুলোর মধো এই কয়েকটি পুষ্টিকর খাবার থাকা
আবশ্যক। আমরা সেই খাবার গুলো নাম এবং কেনো খাওয়া উচিত সেগুলো নিয়ে
আলোচনা করবো।
- এই খাবার গুলোর মধ্যে প্রথম যে খাবার টা আছে সেটি হলো ম্লিক এবং ডেয়ারি প্রডাক্ট। আপনি জনালে অবাক হবেন একজন মহিলার দিনে সারে সাতশ বা তিন কাপ দুধ খাওয়া উচিত। দুধ থেকে যে ডেয়েরি প্রডাক্ট তৈরি হয় যেমন, ছানা, ঘৃ , মাখন, ইত্যাদি দুগ্ধ জাতীয় খাবার থেকে প্রয়োজনিয় যে প্রটিন এবং ক্যালশিয়াম এর চাহিদা সেটা কিন্ত অনেকটা মেকআপ হয়।
- একজন গর্ভবতী মহিলার দুধ এবং দুগ্ধজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। কিন্তু বর্তমানে দুধের সাফলাই এবং তৈরি করার জন্য মিল্কের জোগান দেওয়ার জন্য গরুদের নানান রকম হরমনাল ইনদেকশন দেওয়া হয়। যেগুলো মিল্ক এবং ডেরি প্রডাক্ট এর মাধ্যমে যখন এগুলো আমাদের শরীরে আসে তখন এ সকল দুগ্ধজাতীয় খাবার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সে জন্য অর্গনিক দুধ গ্রহন করা উত্তম। যারা গর্ভবতী তারা তাদের আশেপাশে একটু যদি খোজ করেন তাহলে অর্গানীক মিল্ক কিন্তু অবশ্যই পাবেন ও অর্গনিক মিল্ক থেকে যে প্রডাক্টগুলি পাওয়া যায় সেগুলোও পাবেন। আমার পরামর্শ অর্গানিক মিল্ক বা অর্গানিক প্রডাক্ট গুলো অবশ্যই আপনার জন্য বেটার হবে।
- দ্বীতিয় যে জিনিস টা সেটি হচ্ছে ডাল এবং দানা শস্য । প্রতেকদিন রাত্রে যাদি একবাটি কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রাখা যায় একজন প্রেগন্টে মহিলা যদি সকালে ব্রেকফাস্টে সেই কাঁচা ছোলাটা নেন এবং সারাদিনে ল্যান্স এবং ডিনারে কোন এক রকম ডাল খান তাহলে কিন্ত তার ফাইবার প্রটিন ভিটামিন এবং ফূলেটের চাহিদা টা অনেক টা পূরন হয়।
- তিন নম্বার যে গুরুত্বপূর্ণ বষয় সেটি হচ্ছে ডিম। ডিম কে সুষম খাদ্য বলা হয়। ডিমের মধো প্রচুর পরিমানে ভিটামিন মিনার্লেস প্রটিন এবং গুড ফ্যাট থাকে। একজন গর্ভবতী মহিলার দন্যনদিন চাহিদার গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট। একজন গর্ভবতী মহিলার প্রতেকদিন একটি করে সীদ্ধ ডিম খাওয়া আবশ্যক।
- চার নম্বার যে গুরত্বপূর্ণ বিষয় টা সেটি হচ্ছে সবুজ শাক সবজি। যেকোনো শাক এবং সবজি , সবুজ রং এর যেকোনো খাবারে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন-এ , ভিটামিন- কে, এবং ভিটামিন-সি এর খুব ভালো উৎস। সে জন্য দুপুরে খাবার এবং রাতের খাবারে একজন গর্ভবতী মায়ের সবুজ শাক-সবজি কিন্ত আবশ্যক।
- ৫ নম্বার যে বিষয় সেটি হচ্ছে লিনমেন্ট অর্থাৎ সাদা মাংশ। এই লিনমেন্ট চিকেন এবং মাছে পাওয়া যায়। এই লিনমেটের মধ্যে যে ফ্যাক্ট টা থাকে সেটার পরিমান কম হয় এবং ক্যালরির পরিমান ও কম হয়। এটিতে কিন্তু ভালো কোওয়ালিটির প্রটিন এবং আয়রনের ভালো উৎস। আপনার প্রতিদিনের খাবারে মাছ ও সামান্য হলেও সাদা মাংশ রাখতেই হবে।
- আমরা যে চাল ফুটিয়ে ভাত বানায় সেটা কিন্তু একটা বিফ্রাইনগ্রেন। একটি গ্রেইন বা দানা শস্য এর মধ্যে অনেকগুলো অংশ থাকে যেগুলো কে ঝারায় করে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, চালের ক্ষেত্রে ও কিন্ত তাই করা হয়। এমন অনেক গ্রেইন আছে যার মধ্যে এই ঝারায়ের কাজ করা হয় না যেমন ব্লাকরাইস, ব্রাউন রাইস, কুইনো বা কিনবা, ভুট্টা, ইত্যাদি দানা শস্য। এগুলোর মধ্যে দানা শস্য এর অন্যন্যে উপাদান রেখে দেওয়া হয়, সেগুলোতে কিন্তু প্রটিন ও ভিটামিন এর পরিমান অনেক বেশি থাকে। তাই এই ধরনের খাবার আপনার প্রতিদিনের খাবারের চ্যাটে রাখতে হবে। যদি সম্ভব হয় চেষ্টা করবেন মাঝে মধ্যে ভু্ট্টা বা পপকোন খাওয়ার।
- সাত নম্বার যে খাবার নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে ড্রাইফুট। আখরোট, আমান, ফিক, কাজু, কিসমিচ, এগুলো ডাইফ্রুট এর মধ্যে পরে যেগুলোতে আয়রন, ফলেট এবং ভিটামিন- সি এর খুব ভালো অংশ। এগুলো আপনার মত একজন প্রেগন্টে মহিলার প্রতিদিনের ডায়েটে এ্যড করা উচিত। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে আপনি যদি ২-৩ টি আমান্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখেন এবং সকাল বেলা খালি পেটে খোশা ছাড়িয়ে খাবেন।
- বাচ্চা যখন গর্ভের ভিতরে থাকে তখন ফিটাসের পাশে অ্যামিউনিটি ফ্লুইট থাকে সেটা তার ডেভালেপমেন্ট ও মুভমেন্ট এ হেল্প করে। একজন মহিলার সারাদিনে প্রায় তিন লিটার এর অধিক পানি খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ সন্তান পেতে ৬টি ফল-কোন ফল গুলো ক্ষতিকর
প্রথমে বলি ফল খাওয়া মানে দামি আপেল, বেদেনা, কিউই, স্ট্রবেরি এগুলো নয়। এগুলোও
ফল খেতে পারলে উপকার ও প্রটিন পাবেন। কিন্তু এখন যে ফলগুলো নিয়ে কথা বলবো
সেগুলো ভিটামিন ও প্রটিন এ ভরপুর ঘরুয়া ফল। যেগুলো আপনি হাতের নাগালে এবং
সস্তায় পাবেন। এগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে অনেক উকৃত হবেন যেমন- ঘুম ভালো হবে,
কষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে, ইত্যাদি উপকার আপনি পাবেন, শেষে কথা বলবো কয়েকটি ফল
সম্পর্কে যেগুলো আপনার এবং গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।
প্রথমে যে ফলটির কথা বলবো সেটি হচ্ছে পেয়ারা। এটা আমার পার্সোনাল ফ্রেবরেট ও
বেশির ভাগ মানুষ এই ফল পছন্দ করে। আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি তাদের বাড়িতে বা
বাড়ির আশেপাশে প্রতিবেশিদের বাড়িতে পেয়ারা গাছ থাকে। আর আমরা যারা শহরে বসবাস
করি তারা বাজারে সারা বছর সস্তায় এই পেয়ারা পেয়ে থাকি। পেয়ারায় অনেক
বেশি পরিমাণে ভিটামিন- সি, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম ও ফলেট থাকে। আমরা জানি
গর্ব অবস্থায় ফলেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গর্ভের বাচ্চার ব্রেন
ডেভেলপমেন্ট এর ক্ষেত্রে। এ জন্য আমরা বলে থাকি বাচ্চা আসার সঙ্গে সঙ্গে ফলেট
স্টার্ট করতে, যারা এখনো ফলেট খাওয়া শুরু করতে পারেন নি তারা অবশ্যই প্রতিদিন
পেয়ারা খাবনে।
পেয়ারাতে থাকে অনেক বেশি পরিমানে থাকে ভিটামিন সি, যা বডিতে ইমিউনিটি বাড়াতে
সাহায্য করে এবং রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। কারন ভিটামিন-সি আয়রন
উৎপন্ন করে।
পেয়ারাতে অনেক বেশি পরিমান ফাইবার থাকে যা আমাদের কষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
সহায়তা করে । তারপরে আসছে ম্যাগনেশিয়াম পেয়ারাতে অনেক বেশি পরিমানে
ম্যাগনেশিয়াম থাকে যা আমাদের বডিতে মাসেল রিল্যাকশন হিসাবে কাজ করে। গর্ভবস্থায়
হাত ও পায়ের মাসেল ক্র্যাপ হয়, এর সমাধান আছে পেয়ারাতে।
সারাবছর সবচেয়ে সস্তায় যে ফল টি আমরা পেয়ে থাকি সেটি হচ্ছে কলা। আর এই ফল টি
সারা বছর সস্তায় পাওয়া যায় বলে এটাকে আমরা অবহেলা করি। কলাতে বেশি পরিমানে
বি-6, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফলেড, এবং জিং থাকে। ভিটামিন বি-6 প্রেগনেন্সিতে
অতিরিক্ত বমি ভাব কমায়, পটাশিয়ম রক্তচাপ নিয়ত্রণ করে, ম্যাগনেশিয়াম আগেই বললাম
শরীরে মাসেল ক্যাম দূর করতে সহায়তা করে, ফলেট বাচ্চার ব্রেন ডেভালমেন্ট এ সহয়তা
করে। এছাড়া কলা অনেক ইন্সট্রান এনার্জি দেয় সতরাং যারা লো এনার্জিতে ভুকছেন বা
দূর্বলবোদ করছেন তারা দিনে কমপক্ষে দুটো করে কলা অবশ্যই খাবেন।
এখন যে ফলটির কথা আমি বলবো সেটি হচ্ছে লেবু, অরেঞ্জ, মালটা এই জাতীয় ফল
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন। এতে পানি অনেক বেশি পরিমানে থাকে যা
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। প্রেগনেন্সিতে হাইড্রেসন ভিশন ভিশন গুরুত্বপূর্ণ,
এছাড়া লেবুতে অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন-সি থাকে যা বডিতে ইমিউনিটি বাড়ায় রক্ত
স্বচ্ছ করতে সহয়তা করে। এই ফলগুলোর মধ্যে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফাইবার অনেক
বেশি পরিমানে থাকে যার গুরুত্ব কি সেগুলো উপরে আলচনা করলামই।
চার নম্বারে যে ফলটির কথা বলবো সেটি হচ্ছে শসা, এটি অনেক বেশি সহজলভ্য একটি ফল।
যতে অনেক বেশি পরিমানে থাকে ওয়াটার কনটেন্ট ও ফাইবার যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাকে
এবং কষ্টকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া শসার মধ্যে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি
ও ভিটামিন-কে থাকই ভিটামিন বি-6, ও বি-9 অনেক বেশি পরিমানে থাকে যা শরীরে
অ্যাকজায়টি দূর করে, স্ট্রেস কমায়, মুড ফ্রেশ করে। তাই প্রদিনের খাদ্য তালিকায়
মসা অবশ্যই রাখবেন।
এখন যে ফলটির কথা আমরা জানবো সেটি হচ্ছে সফেদা। প্রেগনেন্সিতে সফেদার উপকারিতা
বলে শেষ করা যাবে না ক। সফেদাতে পচুর পরিমানে ফাইটামিস থাকে নিউট্রিন থাকে,
প্রচুর এনারর্জি থাকে, এটি কষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে, শরীরের প্রদাহ
কমাতে সহায়তা করে, ব্লাড পেশার নিয়ত্রণ করতে সহায়তা করে। তবে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সফেদার আছে এটি হচ্ছে একটি ন্যাশনাল ডাইওড্রিক্স। শরীর
থেকে অতিরিক্ত পানি সফেদা বের করে দেয়। যেসমস্ত মায়েরা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন,
অতিরিক্ত পা ফুলাতে ভুগছেন তাদের জন্য সফেদা ভিশন উপকারি।
উপরক্ত আলোচনা থেকে আমরা নিষিদ্ধ ফল সম্পর্কে জেনেছি, সেগুলো হচ্ছে কাঁচা পেপে,
আনারস, আঙ্গুর আরো কিছু নিশিদ্ধ ফল সম্পর্কে আমরা জেনেছি।
শেষ মন্তব্য
আশা করছি আমার এই পোস্ট এর আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন কোন ফলগুলো আপনি
খাবেন ও কোনগুলো খাবেন না। ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই চেষ্টা অর্গানিক ফল খাওয়ার এবং
ফল ভালো করে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন পরিষ্কার করে খাবেন। সকলের সুসাস্থ্য কামনা
করছি। আস-সালামুয়ালইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url